ঝলমলে আলো ঝা চকচকে ফ্লোর না থাকলেও গ্রামের খুদে শিল্পীদের প্রতিভা দেখলে কপালে উঠবে চোখ, বড় প্ল্যাটফর্মের প্রতীক্ষায় রয়েছেন প্রশিক্ষকরা

মলয় দে নদীয়া :-বর্তমানে এখন টিভি খুললেই বিভিন্ন রিয়ালিটি শো।সেগুলি বেশিরভাগই গান নাচ জিমনাস্টিকের সমন্বয়ে। আর সেই কারণে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের অভিভাবকরা মনে করেন শরীর মন দুটি একই সাথে সুস্থ থাকে তাই এ ধরনের বিষয়ে তাদের ছেলেমেয়েদের শেখাতে উৎসাহী।তবে শহরাঞ্চলের মানুষজন বা শিক্ষার্থীরা খুব সহজেই এই ডান্স রিয়েলিটি শোতে অংশ নেওয়ার জন্য, উন্নত মানের প্রশিক্ষণ পায়। অপরদিকে গ্রামাঞ্চলের প্রতিভাবান নৃত্যশিল্পীরা আজও সঠিক প্রশিক্ষণের অভাবে এই সমস্ত বড় মঞ্চে তাদের প্রতিভা ফুটিয়ে তুলতে পারেনা।এবার সেই চিন্তা ভাবনাকে মাথায় রেখেই নদীয়ার দত্তপুলিয়ার দুই যুবক সমাজের পিছিয়ে পড়া এবং প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও, যারা এখনো পর্যন্ত বড় মঞ্চে তাদের প্রতিভা প্রকাশ করে উঠতে পারেনি, ২০১৮ সালে তাদের জন্য নৃত্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ওম ডান্স একাডেমি খুলেছিল। দত্তফুলিয়ার অভি পাল এবং পলাশ বিশ্বাস এই চিন্তা ভাবনা মাথায় রেখে একজন ছাত্রকে নিয়ে নদীয়ার সীমান্তবর্তী এলাকার পাশে এই নাচের স্কুল শুরু করে। তাদের মূল লক্ষ্য বড় বড় রিয়্যালিটি শো যেগুলো টিভি চ্যানেলে অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে বাংলার গ্রামাঞ্চলের প্রতিবাদের বিশ্ব সম্মুখে তুলে ধরা।প্রথমে একটি ছাত্র নিয়ে শুরু করলেও পরবর্তীতে একাধিক ছাত্র তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়।বর্তমানে তাদের ছোটদের একটি গ্রুপ এবং বড়দের একটি গ্রুপ রয়েছে। যেখানে রয়েছে বিশেষ আকর্ষণীয় দুজনের ডুয়েট গ্রুপ।

এখানে কনটেম্পোরারি, হিপ হপ, সালসা,জিমন্যাস্টিক classical এর মতো বিভিন্ন রকমের উন্নত মানের নাচের প্রশিক্ষণ দিয়ে, গ্রামের প্রতিভাবান ছাত্র-ছাত্রীদের তাদের শিল্পের জগতে প্রতিষ্ঠিত করাই তাদের মূল লক্ষ্য।তারা চায় বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সাধারণ মানুষরা দেখেন এই প্রতিবাদের। তবে যাদের ট্যালেন্ট আছে যারা এই সমস্ত অনুষ্ঠানে যাওয়ার যোগ্য তারাই আজ যোগাযোগ এবং সঠিক প্রশিক্ষণের অভাবে সেখানে পৌঁছাতে পারছে না। তাই তাদের সঠিক প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন ডান্স রিয়ালিটি শো তে অংশগ্রহণ করানোই মূল লক্ষ্য নিয়ে তাদের এই নৃত্য স্কুলের পথ চলা।তবে ইচ্ছা থাকলেও উপায় নেই।তার কারণ দুজন মানুষের পক্ষে এত বড় দায়িত্ব শুধু প্রশিক্ষণের মধ্যেই চলে যাচ্ছে।

এই নাচের স্কুল চালাতে এবং বিভিন্ন রকম রিয়ালিটি শো তে পৌঁছানোর জন্য পর্যাপ্ত যোগাযোগ এবং আর্থিক অবস্থার সেরকমভাবে কোন সহযোগিতা নেই। সম্প্রতি কলকাতায় একটি কম্পিটিশনে যোগ দেয় ওম ডান্স একাডেমি। যদিও এটি কোন reality show নয়।তবে তাদের প্রতিভাবান শিল্পীদের প্রতিভা জনসমক্ষে আনার জন্য এই কম্পিটিশনে অংশ নিয়ে তারা। তারা মানুষকে দেখিয়েছে গ্রামের প্রতিভাও কোন অংশে কমে নেই শহরাঞ্চলের প্রতিভার থেকে। বর্তমানে নদিয়া জেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বিভিন্ন রকম নাচের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছে ওম ডান্স একাডেমি।

আর সেখান থেকে দর্শকদের বাহবা এবং নৃত্যশিল্পীদের অগাধ পরিশ্রমে প্রশিক্ষিত নৃত্য সকলের সামনে উপস্থাপন করে মন জয় করে নিয়েছে সকলের।তবে আবারও পিছু ডাকে সেই আর্থিক অনটন।তাই কোন সহৃদয় ব্যক্তি বা কোন গ্রুপ যদি তাদের সঙ্গে আর্থিক সহযোগিতা এবং সঠিক যোগাযোগের রাস্তা করে দেয় তাহলে তারা অনেকটাই তাদের স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যাবে।তবে এই অদম্য জেদকে বাস্তবায়িত করে 2018 সাল থেকে তাদের যে নিরলস পরিশ্রম তা সত্যিই বাহবা দেয়ার মত কাজ।আমরাও সংবাদমাধ্যমের তরফে তাদের এই প্রয়াসকে কুর্নিশ জানাই।