মলয় দে নদীয়া :- বয়স যে, সংখ্যা মাত্র সে তো আমরা সকলেই জানি, কিন্তু এটা জানি কি বুড়ো বয়সেও ইচ্ছা শক্তির জোরে, জামাইকে নিয়ে ঘটা করে জামাইষষ্ঠী পালন করা যায়…..হ্যাঁ, আমরা ভাট বকছি না বরং নদীয়ার বুকেই দেখা গেল এমনই এক অভূতপূর্ব ঘটনা….যেখানে সেঞ্চুরি হাঁকানো শাশুড়ি, আর হাফ সেঞ্চুরি পার করা জামাইকে নিয়ে এক অভিনব জামাইষষ্ঠী পালন….তবে, নদীয়ার মাজদিয়ার বাসিন্দা ফুলিতা দা, বয়স প্রায় ১০০ কাছাকাছি হতে চলেছে। স্বাভাবিকভাবেই জামাই এর বয়সও ৬০ পেরিয়ে গিয়েছে। তবে বয়স বেড়ে গেলেও বাঙালি রীতিনীতিতে ভাটা পড়েনি এতোটুকুও।
আজও প্রতিবছর জামাইষষ্ঠীর দিনে জামাইকে বরণ করার জন্য আসেন তিনি। এবং ৬০ ঊর্ধ জামাই ও তার স্ত্রী এবং পুত্রও শাশুড়ি মায়ের থেকে আশীর্বাদ নিতে অপেক্ষা করে থাকেন এই দিনটির জন্য।সম্পূর্ণ বাঙালি প্রথায় ফুলিতা দেবী বরণ করেন তার জামাইকে। আসনে বসে থাকেন জামাই, এবং তার পাশে স্ত্রী ও পুত্র। এরপর জামাইয়ের সামনে দেওয়া হয় ফলাহার। যার মধ্যে থাকে দই চিড়ে আম কাঁঠাল কলা ইত্যাদি। প্রথমে গঙ্গাজল সহযোগে পান পাতা দিয়ে শাশুড়ি মা তার জামাই ও মেয়েকে করেন বরণ।
এরপর ধান দুব্য দিয়ে জামাই এবং মেয়ে এবং তার সঙ্গে নাতিকেও করেন আশীর্বাদ। তারা সকলেই বৃদ্ধা ফুলিতা দেবীর চরম স্পর্শ করে, করেন প্রণাম। এরপর পাঁচ রকমের গোটা ফল কাঁসার থালায় জামাইয়ের হাতে তুলে দেন শাশুড়ি। তারপর তাকে দেওয়া হয় তালপাতার পাখা দিয়ে হাওয়া, যেটি অন্যতম রীতি জামাই ষষ্ঠীর। এরপর নিজের হাতে খাইয়ে দেন জামাইকে দই এবং মিষ্টি।বছরের পর বছর এভাবেই চলে আসছে জামাইষষ্ঠীর নিয়ম এবং নিষ্ঠা নদিয়ার মাজদিয়ার দাঁ পরিবারে।যা গোটা নদীয়াজুড়ে, এই জামাইষষ্ঠীর দিনে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করল…