সাড়ে ১২ হাজার খাতায় যোগে ভুল, মাধ্যমিকে নয়া বিতর্ক

যোগের ভুল। তাও আবার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমিকের পরীক্ষকদের! সামান্য এই ভুলের জেরেই কম নম্বর দেওয়া হয়েছিল প্রায় সাড়ে ১২ হাজার উত্তরপত্রে। কিছু ক্ষেত্রে ২২ নম্বর যোগ করতে ভুলে গিয়েছিলেন পরীক্ষকরা। শুক্রবার মাধ্যমিকের রিভিউ-স্ক্রুটিনির ফলপ্রকাশের পরই সামনে এল এই তথ্য। আর তাতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে শিক্ষামহলে।স্ক্রুটিনির পর নম্বর বেড়েছে মোট ১২ হাজার ৪৬৮টি উত্তরপত্রে। রিভিউতেও ১ হাজার ২৩৮টি উত্তরপত্রে নম্বর বাড়ানো হয়েছে। ফলে বদলে গিয়েছে মাধ্যমিকের মেধা তালিকা। প্রথম দশে ঢুকে পড়েছে আরও সাতজন। আর চারজনের র‌্যাঙ্কে উন্নতি হয়েছে কয়েক ধাপ। তবে এই নম্বর বৃদ্ধির সুফল পাবে না সংশ্লিষ্ট ছাত্রছাত্রীরা। কারণ, একাদশের ভর্তি প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শেষ। যা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ অনেকেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পড়ুয়ার কথায়, ‘পরীক্ষকদের ভুলে আমাদের ভুগতে হল। আরও কত ভুল হয়েছে, কে জানে! এই ভুলের দায় কে নেবে, পর্ষদ না শিক্ষামন্ত্রী?’চলতি বছর মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭ লক্ষ ৮৫ হাজার ২৫২ জন। তার মধ্যে ৪১ হাজার ৭৮১ জন স্ক্রুটিনির আবেদন করেছিল। অর্থাৎ উত্তীর্ণদের ৫.৪৬ শতাংশই প্রাপ্ত নম্বরে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। মোট ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৪৯২টি উত্তরপত্রের স্ক্রুটিনি করার আর্জি জমা পড়েছিল। তার ৯.৩৪ শতাংশেরই নম্বর বেড়েছে। এছাড়া ১ লক্ষ ৪৭ হাজার ৩৪৬ জন অকৃতকার্যের ২.৩৮ শতাংশ বা ৩ হাজার ৫০৮ জন রিভিউয়ের আবেদন করে। আওতায় ছিল ১৪ হাজার ২২৯টি উত্তরপত্র।

তার মধ্যে নম্বর বেড়েছে ৮.৭ শতাংশের। এত হাজার হাজার উত্তরপত্রে নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে স্রেফ যোগে ভুল হল কীভাবে? মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, ‘প্রায় ৭০ লক্ষ উত্তরপত্রের মধ্যে এই সংখ্যাটি ভগ্নাংশ মাত্র। তাও এটা না হলেই ভালো হতো।’ তিনি এমনও দেখেছেন যে, ছোট প্রশ্নের ২২ নম্বর যোগ করতেই ভুলে গিয়েছেন কোনও পরীক্ষক। অর্থাৎ ওই পরীক্ষার্থীর ন্যূনতম ২২ নম্বর বেড়েছেই। একাধিকবার ‘চেকিং’-এর পরেও এই ভুল হল কীভাবে? জানতে চাইছে পর্ষদ।এ ধরনের ভুলের ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে? পর্ষদ সূত্রে খবর, বহু পরীক্ষা পরিদর্শক এবং পরীক্ষকের বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগে শুনানি চলছে। তাতে যা সিদ্ধান্ত হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে পর্ষদ। কী ব্যবস্থা, তা জানা যায়নি। বহু অভিভাবকের দাবি, রিভিউয়ের আবেদন তারাই করতে পারে, যারা অকৃতকার্য হয়েছে। অনেক ছাত্রছাত্রী পাশ করলেও নম্বরে সন্তুষ্ট নয়। তারা স্ক্রুটিনির আবেদন করেছে। কিন্তু রিভিউয়ের আর্জি জানাতে পারেনি। তাদের বক্তব্য, অনেক ক্ষেত্রে প্রাপ্য নম্বরের কম দেওয়া হয়েছে। যদিও পর্ষদ সভাপতির দাবি, নম্বরে বৈষম্য রুখতে পরীক্ষকদের আদর্শ উত্তরপত্র দেওয়া হয়েছিল।