পরিবারের বোঝা হতেই, এই বৃদ্ধকে তাড়িয়ে দিয়ে, কিভাবে জুটলো ১৪ বছরের এক ভগবানের আশ্রয়? দেখুন, নদীয়ার সেই ঘটনা….

মলয় দে নদিয়া :- স্বামী-স্ত্রী আর এলসিসিয়ান জায়গা বড়ই কম, আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম….এক্ষেত্রে বৃদ্ধাশ্রম হলেও বুঝতাম তারা পদে আছে….কিন্তু, চাইনা প্রোডাক্ট এর মতন ইউযান থ্রো হয়ে যেতেই, এই অসহায় বৃদ্ধকে চুপি চুপি কারা রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে গেল?দেখুন, নদীয়ার যে ঘটনা দেখলে হয়তো আপনার গাও শিহরণ দিয়ে উঠবে….পরিবার থেকে বিতাড়িত ৮৬ বছর বৃদ্ধর পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়ালো ১৪ বছর বয়সী এক কিশোর। প্রায় পাঁচ দিন ধরে পড়ে রয়েছে পৌর বাসস্ট্যান্ড বিশ্রামাগারে, নেই দেখার কেউ। এখন সমস্ত দায়ভার কাঁধে তুলে নিয়ে এক অনন্য নজির গড়লো নদীয়ার শান্তিপুরের এক অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র দীপ মন্ডল।

বৃদ্ধ রুহিদাস ধর, বাড়ি উত্তর চব্বিশ পরগনার কাঁচরাপাড়া ভূত বাগান রবীন্দ্রপল্লী এলাকায়। বাড়িতে রয়েছে দুই পুত্র সন্তান, সাথে তাদের স্ত্রী। বার্ধক্য জনিত কারণে এখন আগের মত আর চলাফেরা করতে পারেন না তিনি। বিভিন্ন রোগের কারণে ঔষধের খরচা এখন অনেকটাই বেশি, মুখে দাঁত না থাকার কারণে শক্ত জিনিস চিবিয়ে খেতে পারেন না, তাই সবার থেকে আলাদা তার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করতে হয়।

আর এত রকম দায়িত্ব কোন রকম ভাবেই আর বহন করতে চান না বৃদ্ধ রুহিদাস ধর এর ছেলেরা এবং পুত্রবধূরা এমনই অভিযোগ তার। এই নিয়ে প্রায় সংসারে অশান্তি লেগেই থাকত তাদের, অবশেষে ছেলে এবং পুত্রবধূদের দায়িত্বমুক্ত করতে মানসিক অবসাদে ঘর ছাড়তে বাধ্য হন বৃদ্ধ। বাড়ি থেকে কাউকে কিছু না বলে অভিমানী হয়ে নিজের পরিচয় পত্র আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ড সহ বেরিয়ে আসেন তিনি।
উঠে পড়েন শান্তিপুর গামী ট্রেনে, এরপর আশ্রয় স্থান এখন শান্তিপুর থানার মোড় নিকট পৌর বাসস্ট্যান্ড বিশ্রামাগারে।

এখন থেকে ৫দিন আগে দীপ মন্ডল খেলার ছলে ওই বিশ্রামাগারে গিয়ে দেখে বৃদ্ধ পড়ে রয়েছে, তখনই বৃদ্ধর প্রতি আর মায়া ত্যাগ করতে পারিনি কিশোর। সোজা ছুটে যান বাড়িতে স্কুলের টিফিন খাওয়ার বাচানো পয়সা থাকে খাবার কিনে এবং মায়ের কাছ থেকে আবদার করে নিয়ে আসা খাবার এনে দেয় দিনে দুবার রাতে একবার। কিশোরের এই উদ্যোগ দেখে আশেপাশের অনেক দোকানদারেরা ওই বৃদ্ধকে খাবার দিতে থাকেন, কিন্তু আপন নাতি না থাকলেও ওই কিশোর এখন দীপকেই নাতির মত মনে করছেন। একেই বলে সম্পর্ক কখনো রক্ত দিয়ে হয় না, মায়া মনে থাকলে সম্পর্ক এমনি তৈরি হয়…..