জেলা সভাপতিকে অ্যারেস্ট করিয়ে দিয়েছি’ এবং ‘একটা কাক মেরে ঝুলিয়ে দেওয়ার’ গল্প মমতার

বুধবার সন্ধেয় উত্তরবঙ্গের দাপুটে তৃণমূল নেতা দেবাশিস প্রামাণিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দেবাশিস হলেন ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি ব্লকের সভাপতি। যে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক ছিলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব।দেবাশিস তাঁর ছায়ায় বেড়ে উঠেছিলেন বলে মনে করেন অনেকেই।দেবাশিসকে যে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই গ্রেফতার করা হয়েছে তা সবার আগে লেখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার নবান্নে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও স্বীকার করেন, হ্যাঁ সেটাই। তিনিই বলেছিলেন, গ্রেফতার করতে।মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘ডাবগ্রামে দেখেছেন তো আমি জেলা প্রেসিডেন্টকে অ্যারেস্ট করিয়ে দিয়েছি। সরকারি জমি বেচে দিচ্ছিল। ওই জমিগুলোর মিউটেশন হবে বনা’।জমি মাফিয়াদের নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তা গত সপ্তাহে নবান্নে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে প্রশাসনকে বলেছেন মমতা। তিনিও ওই বৈঠকে এও বলেন, এই মাফিয়াদের সঙ্গে দলের কারও কারও যোগাযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে পুলিশেরও কারও কারও মদত রয়েছে। জমি মাফিয়াদের কারবার বন্ধ করতে পই পই করে বলা সত্ত্বেও জেলা শাসকরা কেন শুনছেন না সে বিষয়েও কৈফিয়ত চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পর এতদিনে নড়ে বসল প্রশাসন। এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই একটা দাওয়াই প্রাসঙ্গিক। সোমবার নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসন ও পুলিশের কর্তাদের জবরদখল উচ্ছেদের প্রসঙ্গে বলেছিলেন, একটা কাক মেরে ঝুলিয়ে দাও। দেখবে বাকি কাকরা ভয় পেয়ে আর আসবে না।অনেকের মতে, দেবাশিস প্রামাণিককে গ্রেফতার করাটা সেই ফর্মুলাতেই হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী যে দলের কোনও ব্লক সভাপতিকে গ্রেফতার করিয়ে দিতে পারেন, সেটা অনেকেই ভাবতে পারেননি। কিন্তু দেবাশিসের ঘটনা এবার অনেককে ভাবাবে।২০১৪ সালে চিটফান্ড কাণ্ডের সূত্রে বিজেপি যখন তৃণমূলের সমালোচনা শুরু করেছিল, তখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তুলেছিলেন, মুকুল চোর, কুণাল চোর? তাঁর সেই অবস্থান থেকে এখনকার অবস্থানের ফারাক স্পষ্ট বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের অনেকে। তাঁদের মতে, মমতাও বুঝতে পারছে দলের এক শ্রেণির নেতার অপরিসীম লোভ। তাঁরা ণত্বষত্ব ভুলে গেছেন। তার সুবিধা নিচ্ছেন পুলিশ ও আমলাদের কেউ কেউ। এই বল্গাহীন চুরির সময় এসে গেছে। নইলে জল এবার মাথার উপর উঠে যাবে।