জমি দখলের বিরুদ্ধে অ্যাকশন শুরু! গ্রেপ্তার ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির দাপুটে তৃণমূল নেতা দেবাশিস প্রামাণিক

সানী রায় শিলিগুড়ি :- ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা দলের ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি ব্লক সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিককে গ্রেপ্তার করল নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশ । আমবাড়ি ফাঁড়ি এলাকার পাঘালুপাড়ার বাসিন্দা জনৈক বিমল রায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় এই নেতাকে। জানা গিয়েছে, দেবাশিসের বিরুদ্ধে জমি দখল, নথি বিকৃত করা, মারধর, খুনের চেষ্টা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টা থেকে তাঁকে জেরা করে পুলিশ ও শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই মুহূর্তে শিলিগুড়ি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে দেবাশিসকে।

সেখানে প্রচুর তৃণমূল কর্মী সমর্থকর জমায়েত করে। পরে থানা থেকে বের করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য দেবাশিস প্রামাণিককে শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।গতকালই নবান্নে পুরসভাগুলিকে নিয়ে এক বৈঠকে ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি এলাকায় জমি দখল নিয়ে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বৈঠকে উপস্থিত শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবকে রীতিমতো ভর্ৎসনা করেন তিনি। কোনওভাবেই জমি দখলের ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই দেবাশিস প্রামাণিককে গ্রেপ্তার করা হয়।একসময় কংগ্রেস করলেও পরে তৃণমূলে যোগ দেন দেবাশিস প্রামাণিক।

ফুলবাড়ি এলাকায় তাঁর প্রাসাদোপম বাড়িও রয়েছে। বিভিন্ন সময় দেবাশিসের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠলেও সেসব নিয়ে থানা-পুলিশ করার খুব একটা সাহস দেখান নি কেউ। ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভা থেকে জিতে ২০১১ সালে বিধায়ক হয়েছিলেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব । পরে গৌতম দেবের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন দেবাশিস। ২০১৮ সালে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সদস্যও হন। ওই এলাকায় তৃণমূলের সংগঠনে কার্যত তিনিই ছিলেন শেষকথা। কিন্তু ডাবগ্রাম ফুলবাড়িতে পঞ্চায়েত নির্বাচন, বিধানসভা ও লোকসভা সবেতেই ধারাবাহিকভাবে ফল খারাপ হয় তৃণমূলের।

লাগোয়া শিলিগুড়িতেও ফল ভাল হয়নি। দলের তদন্তে উঠে আসে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকায় জমির কারবার মাত্রাছাড়া হয়ে পড়েছিল। যার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন তৃণমূলের বহু নেতা-কর্মী। সম্প্রতি শিলিগুড়ি সেবক রোডে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের জমি দখলের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। যার জন্যও মুখ পোড়ে তৃণমূলের। তাই নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো একদিকে যেমন বেআইনি দখলদার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে, অন্য দিকে জমির কারবার বন্ধেও পদক্ষেপ শুরু করা হয়েছে।