ঘড়ির কাটায় রাত তখন দশটা, কিন্তু এক অজানা শব্দে কিভাবে বাইরে বেরিয়ে আসতেই, এ কেমন দৃশ্য? দেখুন…..

সানি রাই জলপাইগুড়ি :- যেন এক দুঃস্বপ্নের রাতের মতন উপলব্ধি করল এই এলাকার মানুষ…টিভির রিমোট হাতে নিতেই, যেন সবকিছু হয়ে গেল ওলোটপালোট…কিন্তু, হঠাৎ বাইরে থেকে কেন ভেসে এলো, সজন হারার আর্তনাদ? দেখুন সেই ঘটনা…..আলিপুর আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী জলপাইগুড়ি জেলাতে সন্ধ্যে নামতেই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। তখন ঘড়িতে রাত দশটা ছুঁইছুঁই। একদিকে ঝড়ো হাওয়া অন্যদিকে বৃষ্টি। কিন্তু এসবের মাঝেও এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে নিজেদের গন্তব্যে ছুটে যেতে মরিয়া প্রত্যেকটি যানবাহন। সবেমাত্র রাতের খাবার খেয়ে টিভির রিমোট হাতে নিতেই এক বিকট শব্দ কানের ভেসে উঠলো বিবেকের। আর ব্যাস পরবর্তী অভিজ্ঞতা তড়িঘড়ি এক লাফ দিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতেই নজরে এলো এশিয়ান নাইবের উপরে একটি ছোট্ট ম্যাক্সিমো পাল্টি খেয়ে রয়েছে আর ভেসে আসছে চিৎকার ও কান্নার আর্তনাদ। ততক্ষণে বোঝা সারা যে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাগ্রস্থ মানুষদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে হবে নচেৎ এখানেই অনেক কিছুই সমাপ্ত হয়ে যাবে।

আর এরপরেই যা হল তা বাস্তবের সিনেমা কেউ হার মানিয়ে দেবে।জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ির আংরাভাসা নেপালি বস্তিতে ভয়ঙ্কর এক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে গত রাতে। এশিয়ান হাইওয়ে-৪৮ এর পাশে একটি ছোট্ট মেক্সিমো দ্রুত গতিতে চলতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। আহতদের চিৎকারে মুখরিত হয় এলাকা। ধুপগুড়ি গয়েরকাটাগামী জাতীয় সড়কের দুধারে ততক্ষণে দীর্ঘ লম্বা গাড়ির লাইন লেগে যায়। এই ভয়াবহ দৃশ্যের সামনে হতভম্ব দাঁড়িয়ে থাকা মানুষেরা যখন কিছু করতে পারছিল না, তখনই ঝাঁপিয়ে পড়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার একদল যুবক। আর যাদের মধ্যে পরিচিত মুখ বিবেক প্রধান।

যাকে এর আগেও বহুবার আমরা দেখেছিলাম দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষদের নিজে চেষ্টায় হাসপাতালে পাঠাতে।এদিকে স্থানীয় যুবকদের তৎপরতাই আজ বহু প্রাণ বাঁচিয়ে তোলার মতন ঘটনার সাক্ষী আমরা ছিলাম। কুর্নিশ তাদের প্রত্যেককে।সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে যেখানে মানুষ ক্রমশ হৃদয়হীন হয়ে উঠছে, সেখানে এই যুবকদের সদয়তা ও মানবিকতা আমাদের বিশ্বাসকে ফিরিয়ে দেয় যে এখনও ভালো মানুষ আছে।