সংকল্প দে পশ্চিম বর্ধমান :- এটাই যদি বাবা ছেলের সম্পর্ক হয়, তাহলে সত্যিই আজ লজ্জিত এই সমাজ…কারণ, জন্মদাতা পিতা হয়ে নিজের কোলের সন্তানকে যে, এমনভাবে ভালোবাসা উপহার দেবে, যা দেখলে হয়তো আপনি রীতি মতন চমকে উঠবেন…ঘটনাটি ঘটে শনিবার দুপুরে। পশ্চিম বর্ধমান জেলার ( দুর্গাপুরে)। মৃত শিশুর নাম সুজন রুইদাস। বয়স মাত্র ৯ মাস। মৃত ব্যক্তির নাম আবীর রুইদাস (৩৫)। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দুর্গাপুরের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের সগরভাঙার রুইদাস পাড়ায়।
জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি চলছিল। ঘরের বিছানায় তখন খেলা করছিল ফুটফুটে শিশু সুজন। আচমকা সুজনকে বিছানা থেকে তুলে আছাড় মেরে পালিয়ে যায় বাবা আবীর। আশঙ্কাজনক অবস্থায় শিশুটিকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে শিশুটিকে রেফার করা হয় বর্ধমান মেডিকেলকলেজ হাসপাতালে।
রাস্তাতেই মৃত্যু হয় শিশুর।শিশুর দেহ বাড়িতে আনা হয়। ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। কোকওভেন থানার পুলিশ পৌঁছে শিশুর দেহ উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। ততক্ষণে খবর আসে, সুজনের বাবা আবীর দুর্গাপুর স্টেশন সংলগ্ন রেল লাইনে আত্মঘাতী হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা কানাই বাউরি বলেন, “দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাত আবীর ও তার স্ত্রী সরমা। প্রতিদিনই প্রায় অশান্তি লেগে থাকত দুজনের মধ্যে। শনিবার সকালে সেই বিবাদ চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। তখনই আবির নিজের সন্তানকে বিছানা থেকে তুলে আছাড় মারে।
এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা দৌড়ে এসে আবীরকে ধরে চড় থাপ্পর মারতেই সে এলাকা ছেড়ে পালায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর আসে, দেশবন্ধু নগরের কাছে রেল লাইনে মাথা দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে সে। ছেলেকে খুন করে বাবা আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারা কার্যত অবাক। ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে যান দুর্গাপুর নগর নিগমের প্রাক্তন কাউন্সিলর অঙ্কিতা চৌধুরী, প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য দীপঙ্কর লাহা। ঘটনার জেরে এলাকায় এখন শোকের ছায়া।